হরহামেশাই শোনা যায় এসির দুর্ঘটনা

গ্রীষ্মের খরতাপে যেন প্রাণ অতিষ্ঠ। এই সময়ে বাইরে রোদে বের হলেই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি তাপমাত্রা যেন ছ্যাঁকা দেয় গায়ে। সারাদিনের ক্লান্তিকর নগরযাপন শেষে রাতে আপন নীড়ে ফিরে যে একটু শান্তিতে ঘুমাবেন সেই অবস্থাও নেই। আবহাওয়াগত পরিবর্তন এবং নগরে জলাধার ও সবুজ প্রকৃতি হ্রাসের কারণে রাতেও দ্রুত বাতাস ঠাণ্ডা হয় না এখন। তাই হয়তো অনেকেই বলেন এসি এখন আর বিলাসসামগ্রী নয় বরং প্রয়োজনীয় গৃহস্থালী সামগ্রী।
প্রচণ্ড গরমে স্বস্তির এসির ব্যবহারও যে সবসময় নিরাপদ তা-ও কিন্তু নয়। হরহামেশাই শোনা যায় এসির দুর্ঘটনার কথা। এর প্রধান কারণ আমাদের দেশে এসির রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা করা হয়। অনেকে জানেনই না, এসির রক্ষণাবেক্ষণ কীভাবে করতে হয়!
অন্য যে কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মতো এসিরও বিশেষ যত্ন নেয়ার দরকার আছে। এসি ভালো রাখতে নিয়মিত ফিল্টার, কয়েল ও সংযোগ লাইন পরিষ্কার করা, কম্প্রেসরের কার্যক্ষমতা ও বিদ্যুতের সংযোগ যাচাই করা উচিত। তাহলে একদিকে যন্ত্রটি যেমন ভালো থাকবে, তেমনি দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। এই বিষয়ে আমরা কথা বলেছি এয়ারকন্ডিশন প্রস্তুতকারক ও বিপণন প্রতিষ্ঠান এলজির এসি সার্ভিসিং এক্সপার্ট দুলাল দাসের সঙ্গে। জীবনযাপনের হালের প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গটির নানাবিধ দুর্ঘটনা ঠেকাতে কী করবেন সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আরও বলেছেন সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এসি আর বিপজ্জনক মনে হবে না-
১. এসি স্থাপন ও সংযোগ দেওয়ার সময়ে অনেক ভুল হয়। এছাড়া অতিরিক্ত তাপ, ময়লা ও দূষণ, পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট এবং আশপাশে দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি— এগুলোর কারণে এসি দুর্ঘটনা ঘটে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে এসির যত্ন নেওয়া ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি কক্ষে যাতে কোনো দাহ্য পদার্থ না থাকে, তা নিশ্চিতে জোর দিতে হবে।
২. নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে এসি কিনতে হবে। অনেকসময় পুরানো বা নিম্নমানের এসি বিভিন্ন ব্রান্ডের নামে বিক্রি করা হয়। ভালো ব্র্যান্ডের এসি না হলে কম্প্রেসরসহ অন্যান্য যন্ত্র ঠিকভাবে কাজ করে না। এ ধরণের এসির ব্যবহার দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই নিম্নমানের বা নকল ব্র্যান্ডের এসি ও কম্প্রেসার কেনা এবং ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. এসি কেনার আগেই রুমের আকার অনুযায়ী সঠিক ক্ষমতার এসি নির্ধারণ করতে হবে। বাংলাদেশে অনেকক্ষেত্রেই ঘরের আকৃতি অনুযায়ী এসির ক্ষমতা নির্ধারিত হয় না। এটি এসির উপর চাপ বাড়ায়, যা দূর্ঘটনার কারণ হয়।
৪. এসি স্থাপনের সময় ঠিকভাবে সংযোগ দেওয়া না গেলে কিংবা পাইপের কোথাও ছিদ্র হলে তাতে কম্প্রেসরে চাপ বাড়ে। এতে কক্ষ যেমন প্রয়োজন অনুসারে ঠান্ডা হয় না, তেমনি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও থাকে।
0
.jpg)